সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট: ব্রেন টিউমারে কেড়েনিল চাঁদপুর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স (সম্মান) প্রথম বর্ষের মেধাবী ছাত্র মো. আজহারুল ইসলাম শিহাব (২০) এর জীবন।
রোববার রাত সাড়ে ১২টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হসপাতালের নিউরো বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করে।
আজ বাদ আছর চাঁদপুর শহরের হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে তাকে পশ্চিম নাজির পাড়া ছৈয়ালবাড়ী পাবিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। সে ওই এলাকার মৃত মো. সফিকুল ইসলাম দাদনের একমাত্র সন্তান। তার পিতা তাকে শিশু অবস্থায় রেখেই মারা যান।
শিহাব তার মা’নার্গিস আক্তার মনির সাথে একটি ছোট ঘরে অতি কস্টে জীবন যাপন করতেন বলে এলাকাবাসী জানান। এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, শিহাবকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করতে গেলে বাধসাদেন জেঠা রফিকুল ইসলাম দুদু। পরে এলাকাবাসীর চাপের মূখে অবশেষে তাকে দাফন করা সম্ভব হয়।
শিহাবের মৃত্যুর খবর পেয়ে তার মা’নার্গিস আক্তার মনি ছেলের মৃত্যুতে আর স্বাবিক ভাবে থাকতে পারলেন না। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে পাগলের মত হয়ে চিৎকার দিতে গিয়ে একসময় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। প্রিয় শিহাবকে হারিয়ে এলাকার সকলের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে।
খবর নিয়ে যানা গেছে, শহরের পশ্চিম নাজির পাড়া ছৈয়ালবাড়ীর মো: সিরাজুল ইসলাম সিরাজ ছৈয়ালের ২ ছেলে ও ৪ মেয়ে রেখে তিনি মারা যান। তার জীবদ্দশায় তিনি তার ৪ মেয়ে ও ২ ছেলে বিয়ে দেন। মো: সিরাজুল ইসলাম সিরাজ ছৈয়াল (মৃত শিহাবের দাদা) মারা যাওয়া সময় ৮ শতাংশ ভিটি বাড়ি রেখে যান। সে ৮ শতাংশ জায়গায় মধ্যে ছিল চৌচালা একটি ঘর। সেখানে বসবাস করতেন মো: সিরাজুল ইসলাম সিরাজ ছৈয়ালের ২ ছেলে মো: রফিকুল ইসলাম দুদু ও মো: সফিকুল ইসলাম দাদন।
নিহত শিহাবের পিতা মো: সফিকুল ইসলাম দাদনের মৃত্যুর পর থেকে তাদের উপর শুরু হয় নির্যাতন। শিহাবের দাদা সিরাজ ছৈয়ালের চৌচালা ঘরের এককোনে থাকতে দেওয়া হয় শিহাব ও তার মা’ নার্গিস আক্তার মনিকে।
শিহাব ও তার মা’ যে পরিমান জায়গা পাবেন তা’তাদের দেওয়া হয়নি, জেঠা রফিকুল ইসলামের পক্ষ থেকে। অতি কস্টে চৌচালা ঘরের এক কোনে পড়ে থেকে নিরবে সহ্য করে পড়ে থাকেন শিহাব ও তার মা’ মনি। এ কস্টের মধ্যে থেকে শিহাবের মা’মনি স্থানীয় একটি হাসপাতালে অভ্যার্থনার কাজ ও বিভিন্ন বাসায় শিশুদের আরবি পড়িয়ে যে টাকা উপার্জন করতেন তা’দিয়ে ছেলেকে এইচএসসি পাস করিয়ে, চাঁদপুর সরকারি বিশ^বিদ্যালয়ে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি করেন। মায়ের বুক ভরা অনেক আশা ছিলো ছেলেকে উচ্চ শিক্ষিত করলে সুখের দিন আসবে। কিন্ত না বিধিবাম।
শিহাবের মামা মো. মনিরুজ্জামান জানান, গত ডিসেম্বর মাস থেকে শিহাব অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। এক সপ্তাহ পূর্বে শিহাব বেশী অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে আমার কাছে রেখে চিকিৎসা করান হয়। শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে ভর্তি করে তার মাথায় এমআইআর করানোর পড় ধরা পড়েন, শিহাবের ব্রেন টিউমার। চিকি’সকের পরামর্শে চিকিৎসা চলছিল। এরই মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিহাব রোববার রাত সাড়ে ১২টায় মৃত্যুবরন করেন।
শহাবের মা নার্গিস আক্তার মনি তার শ^শুরের রেখে যাওয়া প্রকৃত জায়গার অধিকার ফিরে পেতে এলাকাবাসী দাবী তুলেছেন।
এলাকাবাসী জানান, অসহায় শিহাবের মা যেন তার স্বামীর অধিকার ফিরে পেতে পারে সে জন্য প্রশাসন তাকে সহযোগিতা করার জন্য এলাকাবাসী চাঁদপুর-৩ আসনের সাংসদ মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
চাঁদপুরনিউজ/এমএমএ/