সর্বশেষ গত ২১ নভেম্বর পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১৯.৯২ শতাংশ বাড়ায় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পাঁচ টাকা ১৭ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ছয় টাকা ২০ পয়সা। বিপিডিবির প্রস্তাব অনুযায়ী পাইকারি বিদ্যুতের দাম ৮ শতাংশ বাড়ানো হলে প্রতি ইউনিটের দর হবে ছয় টাকা ৭০ পয়সা।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ভোক্তারা এমনিতেই অনেক চাপের মধ্যে আছে, তার মধ্যে একের পর এক গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির চাপ ভোক্তার পক্ষে বহন করা কঠিন হয়ে যাবে। কারণ লাগাতার গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে নিত্যপণ্যের দাম আরো বেড়ে যেতে পারে। গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির চাপে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে দেশের শিল্প-কারখানাও।
এ বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম. তামিম কালের কণ্ঠকে বলেন, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ প্রায় সব পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় দেখিয়ে সামনে আরেক দফা বাড়বে বিদ্যুতের দাম। এভাবে একের পর এক গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি হলে নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে বাজারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে, যার ফলে বাড়বে মূল্যস্ফীতি। চাপে পড়বে মানুষ।
বিদ্যুৎ বিভাগে পাঠানো বিপিডিবির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বিশ্ববাজারে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, টাকার অবমূল্যায়ন এবং ফার্নেস অয়েলের শুল্ক সুবিধা প্রত্যাহার করায় বিপিডিবির উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। ২০২১-২২ অর্থবছরে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের সরবরাহ খরচ ছিল ৯ টাকা ৪৪ পয়সা। এই অর্থবছরে তা বেড়ে হয়েছে ১১ টাকা ৫৪ পয়সা। চলতি অর্থবছরে ১৭ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি ধরে গত নভেম্বরে দাম বাড়ার পর পাইকারি বিদ্যুতের বিক্রয়মূল্য এখন ছয় টাকা ২০ পয়সা। অর্থাৎ প্রতি ইউনিটে বিপিডিবির লোকসান হচ্ছে পাঁচ টাকা ৩৪ পয়সা। এর মধ্যে গ্যাসের দর ১৭৯ শতাংশ বাড়ায় বছরে বিপিডিবির প্রায় সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা খরচ বাড়বে। ফলে এ খাতে বাড়বে সরকারের ভর্তুকিও। ভর্তুকি কমাতে বিপিডিবি প্রতি ইউনিটে পাইকারি দর গড়ে ৫০ পয়সা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে।