চাঁদপুর: চাঁদপুর জেলা শহরের শত শত আমানতকারীকে ‘অধিক মুনাফা দেয়া হবে’ এমন প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে গেছে বিডি লিংক সিস্টেম লি. নামের একটি এনজিও।
চাঁদপুর শহরের অফিসটি রাতের আঁধারে গুটিয়ে নিয়ে কর্মকর্তা কর্মচারীরা সটকে পড়েছে। যার ফলে কোটি কোটি টাকার আমানতকারী নারী-পুরুষ তাদের জমাকৃত টাকা ফেরত পেতে হন্যে হয়ে বিডি লিংক সিস্টেম লি. চাঁদপুর শাখার দায়িত্বে থাকা ব্যবস্থাপক নজরুল ও তার সহপাঠীদের খুঁজে বেড়াচ্ছেন।
ইতোমধ্যে বিডি লিংক সিস্টেম লি. চাঁদপুর শাখার ব্যবস্থাপক বেশ ক’জন প্রভাবশালী আমানতকারীর তোপের মুখে ২/১ জনকে ব্যাংকের চেক প্রদান করেন। কিন্তু ব্যবস্থাপকের দেয়া চেকে টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকায় চেক বেশ ক’বার ডিজঅনার হয়ে ফেরত আসে। ডিজঅনারকৃত চেক নিয়ে আমানতকারীদের ২/১ জন আইনি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানা গেছে।
অভিযোগকারীরা জানান, এ অবস্থায় শাখার ব্যবস্থাপকসহ কর্মকর্তারা চাঁদপুর শহরের জেএম সেনগুপ্ত রোডের বেগম মসজিদের প্রধান ফটকের পশ্চিম দিকে এবং আদালত পাড়ার প্রবেশ মুখে নবনির্মিত বহুতল ভবনটি ইউএস’এতে বিশাল ডিপার্টমেন্টাল শো-রুম চালু করতে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, তাদের বিডি লিংকের নামে ক্রয়কৃত কয়েক কোটি টাকার জমি রয়েছে বলেও প্রচার করা হচ্ছে। এখন আমানতকারীদের ইউএস বাজার ও জমির মালিক এবং পার্টনারশিপ রয়েছে এমন আশ্বাস দিয়ে বিদায় করে দিচ্ছে। এমন মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে তারা সময় ক্ষেপণের চেষ্টা করছে।
বেশ ক’জন ক্ষুদ্র আমানতকারী অভিযোগ করে বলেন, অসংখ্য নারী-পুরুষ থেকে বড় বড় আমানতের পাশাপাশি ৫ হাজার টাকা করেও নেয়া হয়েছে। জমাকৃত ৫ হাজার টাকা ৪ বছর পর ২০ হাজার টাকা লাভসহ ২৫ হাজার টাকা করে প্রদান করা হবে। এমন আমানতকারীর সংখ্যা প্রায় সহস্রাধিক। ইতোমধ্যে অনেকের ৪ বছর পূর্ণও হয়েছে। কিন্তু লাভ তো দূরের কথা জমাকৃত আসল ৫ হাজার টাকাও ফেরত পাচ্ছে না। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই সংস্থার ব্যবস্থাপকসহ ২/১ জন কর্মকর্তা মানুষের আমানতের টাকা দিয়ে নব নির্মিত বহুতল ভবনের ফ্লোর পজেশন ও ইউএস নামের অত্যাধুনিক ডিপার্টমেন্টাল শো-রুম করতে যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, চাঁদপুর শহরের স্টেডিয়াম রোডের স্টেডিয়ামের উল্টো দিকে ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়ার মালিকানাধীন বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলায় বিডি লিংক সিস্টেম লি. চাঁদপুর শাখা অফিসটি খুব রমরমাভাবে চালু করা হয়। ক’বছর অফিস চালু থাকার পর পরবর্তীতে চাঁদপুর স্টেডিয়াম মার্কেটের দেওয়ান আরশাদ আলীর মালিকানাধীন দোকানটি ৫ লক্ষাধিক টাকা অগ্রিমে ভাড়া নেয় বিডি লিংক। বেশ কিছুদিন আগে রাতের আঁধারে অফিসটি গুটিয়ে ফেলেন চাঁদপুর শাখার ব্যবস্থাপকসহ অফিসের লোকজন। অফিসের বেশির ভাগ মালামাল এখন শাখা ব্যবস্থাপকের বাসায় রয়েছে।
এরপর বিডি লিংক সিস্টেম লি.-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক মশিউর রহমান ফরিদগঞ্জ ও হাজীগঞ্জে তার প্রতারণার কারণে স্থানীয় আমানতকারীরা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতসহ আটকে রাখে। একইভাবে ওই প্রতিষ্ঠানের এমডি এমএ মমিনকেও লাঞ্ছিত করা হয়।